মো: মোস্তফা মিয়া
সাম্প্রতিক সময়ে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় শতাধিক পুরনো মূল্যবান গাছের ডাল-পালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে কেটে ফেলার নামে গাছগুলোর সিংহভাগই কেটে ফেলা হয়। ফলে অসংখ্য পাখি তা মৌসুমি আশ্রয়স্থল ও প্রজনন স্থান হারিয়ে ফেলেছে। প্রায় চার বছর আগে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের গাছ গুলোতে পাখিদের বাসস্থান বানিয়ে দিতে স্থানীয় একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা এগিয়ে আসে। কেটে দেওয়া উল্লেখিত গাছের ডাল-পালা ও কান্ডের গুরুত্বর্পূণ স্থানে পাখির বাসা বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় মাটির পাতিল,কলস স্থাপনের ব্যবস্থা করেছিল। স্বল্প সময়ের ব্যাবধানে গাছের ডাল-পালা গুলো কেটে ফেলায় প্রতিদিন সকাল ও বিকাল হলেই পাখিরা দলবেধে উপজলো চত্ত্বরে তাদের আশ্রয়স্থল খুঁজে বেড়ায় । বর্তমানে পাখিগুলোর ঐ সকল গাছের ডাল-পালায় বসার-সুযোগ নাই। বাধ্য হয়ে পাখিরা অজানার উদ্দশ্যেে চলে যায়। স্থানীয় বিজ্ঞজনদের মতে সাম্প্রতিক সময়ে নির্দয়ভাবে গাছের ডাল গুলো কেটে ফেলায় পাখিরা তাদের পুরাতন আশ্রয়স্থল হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের ডাল কাটার ফলে উপজেলা চত্বরের চিরচেনা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে। একই সাথে দেড়যুগ পূর্বে উপজেলা পরিষদ চত্তরে সরকারিভাবে গড়ে তোলা ভেষজ ঔষধির বাগানটিও উজাড় করে দেয়া হয়েছে। এদিকে প্রতিদিন উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরে নানাবিধ কাজে আসা সমগ্র পীরগঞ্জের আগন্তকদের ছায়াদান করা উপজেলা পরিষদের গাছ গুলোর ডাল কেটে যেভাবে উজাড় করা হয়েছে। তাতে আসছে গরমের মৌসুম, মানুষরা গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিতে পারবেনা। এমনকি ডালপালাহীন গাছের নিচে দাঁড়ানোও হবে কষ্টকর। এ বিয়ষে উপজেলা প্রাণী সম্পদ র্কমর্কতা ডাঃ তাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাহী ক্ষমতার মালিক। এখানে আমরা কি বলতে পারি। সৃষ্ট পরিস্থিতির ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার টি,এম, এ, মমিনের সাথে স্থানীয় সংবাদকিদের সাথে কথা হলে তিনি নবীর সুন্নৎ কে তাচ্ছিল্য করে বলেন " দাড়ি সেভ করলে যেমন মুখমন্ডলকে সুন্দর দেখায়, সেরকম উপজেলা পরিষদ চত্বরের গাছের ডাল-পালা গুলো কেটে দিয়ে পরিষদ চত্বরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। উত্তরটি ধর্মপ্রাণ মুসলিম সমাজে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকের মতে তার এই কর্মকাণ্ড পরিবেশ বিরোধী,অগ্রহনযোগ্য, অসঙ্গতিপূর্ণ এবং দূঃখ জনক।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়নাধীন গৃহ নির্মান প্রকল্প। বর্তমানে পীরগঞ্জ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের বাজেটে অনুমোদিত ২৮৫টি গৃহ নির্মানের কাজ চলছে। বাজটেে ঘর নির্মান বাবদ প্রতিটি ঘর বাবদ ব্যয় এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজের সার্বিক দায়িত্বে ও পরিচালনায় রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি পার্শ্ববর্তী ঘোরাঘাট উপজেলা দিনাজপুর এর একজন ঠিকাদারকে এনে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দেন। উক্ত ঠিকাদার পীরগঞ্জ উপজেলা এলাকা থেকে নির্মান শ্রমিক না নিয়ে, তার নিজ উপজেলা ঘোড়াঘাট থেকে শ্রমিক নিয়োগ দেন। যতদুর জানা যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব টি এম আব্দুল মমিন সাহেবের পূর্ববর্তী কর্মস্থল ছিল ঘোরাঘাট উপজেলা, দিনাজপুর। মমিন সাহেব বিসিএস ক্যাডার অফিসার বিধায় চাকরিটি বদলীর চাকরি। পীরগঞ্জে মমিন সাহেবকে ইচ্ছে করে কেউ অনেক দিন রাখতে পারবেনা প্রশ্ন ১৯৬৫ সালে লাগানো পুরাতন গাছ গুলো কেটে ফেলা ডালপালা গুলো কে কি ভাবে ফেরৎ দেবে? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে। পীরগন্জের বিভিন্ন এলাকার লোকেরা উপজেলা সদরের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য আসা ক্লান্ত লোকজন এখন কোন গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেবে ? বিষয় টি সচেতন মহলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সমগ্র পীরগঞ্জ এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর প্রশ্ন এতো অনিয়ম এবং জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করেও তিনি কিভাবে পীরগঞ্জে টিকে আছেন এবং তার খুটির জোর কোথায়?